Thursday, November 4, 2021

বন্ধ হোক প্রতিহিংসার রাজনীতি চর্চা হোক সুষ্ঠু রাজনীতি|





 বন্ধ হোক প্রতিহিংসার রাজনীতি চর্চা  হোক সুষ্ঠু রাজনীতি| 

প্রকাশ : ০৯ এপ্রিল  ২০১৬, ০০:০০

কাজী দেলোয়ারুল আজীম 

কলাম লেখক । 

রাজনীতি বা রাজার নীতি একটি দেশের উন্নয়নের অন্যতম ধারক ও বাহক। অন্যদিকে প্রতিহিংসার রাজনীতি উন্নয়নের অন্তরায়। অথচ আমরা সুষ্ঠু রাজনীতিচচার্ বাদ দিয়ে প্রতিহিংসার রাজনীতি নিয়ে ব্যস্ত। চারদিকে চলছে কাদা ছোড়াছুড়ির রাজনীতি। সরকার দলীয় নেতাকমীের্দর সঙ্গে বিরোধী দলের নেতাকমীের্দর এক টেবিলে বসে চা খাওয়া তো দূরের কথা কেউ কারোর কথাকে মাটিতেই পড়তে দেয় না, এর আগেই তা নিয়ে বানানো হয় মহাকাব্য। অথচ সমঝোতার ভিত্তিতে চাইলে দেশের অবস্থা ব্যাপক পরিবতর্ন আনা সম্ভব। এই সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক রাজনীতির চচার্ না করে ওত পেতে বসে থাকে কে কাকে কীভাবে ঘায়েল করবে তাই নিয়ে। নতুন প্রজন্ম তাই মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে এই কুৎসিত রাজনীতিচচার্ থেকে। সরকারের ভালো কমর্কাÐগুলো চোখে পড়ছে না বিরোধীদলীয় নেতাকমীের্দর অন্যদিকে আবার সরকারের খারাপ কাজের সমালোচনাকারীদেরও সহজভাবে দেখছে না সরকারদলীয় নেতাকমীর্রা। কে কাকে কীভাবে ডমিনেট করবে তাই নিয়ে রাজনীতির মহলে চলে হট্টগোল। আজ কোনো এক রাজনৈতিক দল একটা জায়গায় সম্মেলন করবে কাল ওই জায়গাতেই অন্য রাজনৈতিক দলের সম্মেলন করা লাগবে। এমনকি এমন দৃশ্য চোখে পড়ে যে একেই দিনে পাল্টাপাল্টি সম্মেলনের ডাক দেয় সরকার ও বিরোধীদলীয় নেতাকমীর্রা। যার ফলাফল সাধারণ জনগণের চরম ভোগান্তি। সমঝোতার মাধ্যমে সিদ্ধান্তে আসা এ যেন বতর্মানে অমাবস্যার চঁাদের মতো এক অলীক কল্পনা। বিরোধীদলীয় নেতাকমীের্দর অব্যশই মনে রাখতে হবে কেবল বিরোধিতার জন্য বিরোধিতা নয়।

গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বলতে বোঝায়, যে শাসনব্যবস্থায় রাষ্ট্রের শাসনক্ষমতা রাষ্ট্রের সব সদস্য তথা জনগণের হাতে ন্যস্ত থাকে তাকে। এটি এমন একটি শাসনব্যবস্থা যেখানে শাসনকাযের্ জনগণের সবাই অংশগ্রহণ করতে পারে এবং সবাই মিলে সরকার গঠন করে। এটি জনগণের অংশগ্রহণে, জনগণের দ্বারা এবং জনগণের কল্যাণাথের্ পরিচালিত একটি শাসনব্যবস্থা। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে জনগণের মতপ্রকাশ ও সরকারের সমালোচনা করার সুযোগ থাকে। এতে নিয়মতান্ত্রিক পন্থায় অথার্ৎ নিবার্চনের মাধ্যমে সরকার পরিবতির্ত হয়। একাধিক রাজনৈতিক দল থাকে, সবার স্বাথর্রক্ষায় সুযোগ থাকে এবং নাগরিকের অধিকার ও আইনের শাসনের স্বীকৃতি দেয়া হয়। গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় রাজনৈতিক দল অপরিহাযর্। আধুনিক গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা মূলত রাজনৈতিক দলেরই শাসন। জনগণের ভোটের মাধ্যমে গঠিত সরকার হচ্ছে গণতান্ত্রিক সরকার। আর রাজনৈতিক দল ছাড়া এই গণতান্ত্রিক সরকার গঠন সম্ভব নয়। এই কথাগুলোই গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের অন্যতম বৈশিষ্ট্য।কিন্তু 


পরিতাপের বিষয় আজকাল রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যেই চলে রেষারেষি। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে আদশর্ ও কমর্সূচিভিত্তিক রাজনৈতিক দলের উপস্থিতি। আর আমাদের দেশে রাজনীতির চিত্র হলো কে নিবার্চনে অংশগ্রহণ করবে আর কে করবে না তা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর কোনো মাথাব্যথা নেই। প্রত্যেকেরই লক্ষ্য একক প্রচেষ্টায় নিবার্চনে গিয়ে ক্ষমতা দখল করা। আজ জনগণ ব্যথর্ হচ্ছে তাদের মতামত প্রকাশে। যদিও সংবিধানে বলা আছে গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় থাকবে সবার অবাধ সুষ্ঠু মতামত প্রকাশ করার ক্ষমতা কিন্তু বতর্মানে তা অনেকটাই বিলুপ্ত প্রায়। এটা সবার মনে রাখা দরকার গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় সরকারের মূল ক্ষমতার উৎস হলো জনগণ। সাধারণ জনগণের মতামত যদি প্রাধান্য না দেয়া হয় তাহলে রাজনীতির সুষ্ঠু চচাের্ক্ষত্র কীভাবে তৈরি হবে, আর কীভাবেই বা এই চচাের্ক্ষত্রে বীজ বপন করবে সাধারণ জনগণ ও নতুন প্রজন্ম।

স্বাধীনতার ৪৭ বছর আজ পেরিয়ে যাচ্ছে অথচ এই স্বল্প সময়ে বাংলাদেশের সংবিধান পরিবতর্ন করা হয়েছে ১৬ বার। যা পৃথিবীর অন্য কোনো স্বাধীন রাষ্ট্রের সংবিধান এই অল্প সময়ের মধ্যে এত বার পরিবতর্ন হয়েছে কিনা সন্দেহ। আমরা যে সরকারই যখন ক্ষমতায় আসি তখন আমাদের মূল লক্ষ্যই থাকে কীভাবে সংবিধান পরিবতর্ন করা যায়। কীভাবে নিজেদের আওতায় নিয়ে আসা যায়। এটা তো রাজনৈতিক একটা প্রতিহিংসা মাত্র। এভাবে যতদিন প্রতিহিংসা রাজনীতি চলবে ততদিন সুষ্ঠু রাজনীতিচচার্র কথা চিন্তা করা আষাঢ়ে গল্পের মতোই।

গণতন্ত্র সফল করার উপায় ও গণতান্ত্রিক আচরণÑ

গণতন্ত্র বতর্মান যুগে প্রচলিত শাসনব্যবস্থাগুলোর মধ্যে সবোর্ৎকৃষ্ট এবং সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য শাসনব্যবস্থা। কিন্তু এর চচার্ বা বাস্তবায়নের পথে অনেক প্রতিবন্ধকতা আছে। এসব প্রতিবন্ধকতা দূর করে গণতন্ত্রের সাফল্যের জন্য প্রয়োজন শিক্ষিত ও সচেতন জনগোষ্ঠী, অথৈর্নতিক সাম্য ও ন্যায়ভিত্তিক সমাজব্যবস্থা, দক্ষ প্রশাসন এবং উপযুক্ত নেতৃত্ব। এ ছাড়া আরও প্রয়োজন পরমতসহিষ্ণুতা, আইনের শাসন, মুক্ত ও স্বাধীন প্রচারযন্ত্র, একাধিক রাজনৈতিক দল ও রাজনৈতিক সহনশীলতা। তবে সবচেয়ে বেশি যেটি প্রয়োজন তা হলো, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের নাগরিকদের গণতান্ত্রিক মনোভাবাপন্ন হতে হবে। তাদের ব্যক্তিগত, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবনের সব ক্ষেত্রে গণতান্ত্রিক আচরণ করতে হবে।


No comments:

Post a Comment

দুরূদ ও সালাম : ফায়েদা ও ফযীলত

  দুরূদ ও সালাম : ফায়েদা ও ফযীলত কাজী দেলোয়ারুল আজীম । Kazi Dalwarul Azim  আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, (তরজমা) নিশ্চয়ই আল্লাহ নবীর উপর রহমত ন...