একজন আলেমর সম্মান মহান আল্লাহর কাছে অনেক ।
২. আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ ফরমান :
জ্ঞানী ও মূর্খ কখনো সমান হতে পারে না।
قا ل الله تبارك وتعا لى :
قُلْ هَلْ يَسْتَوِي الَّذِينَ يَعْلَمُونَ وَالَّذِينَ لا يعلمون ( الزمر 9- )
হে নবী আপনি বলে দিন, যে ব্যক্তি (কুরআন-সুন্নাহ তথা শরীয়াতের বিধান) জানে আর যে জানে না, তারা কি উভয়ে সমান গতে পারে? তার মানে কখনই সমান হতে পারে না।
০৩. যাদেরকে দ্বীন ইলমের জ্ঞান দান করা হয়েছে, তাদেরকে বিশেষ মর্যাদা দান করা হয়েছে ঐসব লোকদের উপর, যারা তা জানে না।
قال الله سبحا نه وتعا لى :
*يَرْفَعِ اللَّهُ الَّذِينَ آَمَنُوا مِنْكُمْ وَالَّذِينَ أُوتُوا الْعِلْمَ دَرَجَاتٌ (المجادلة-11)
তোমাদের মধ্য থেকে যারা ঈমান এনেছে এবং তাদের মধ্য থেকে যাদেরকে দ্বীন ইসলামের জ্ঞান দান করা হয়েছে, তাদেরকে বিশেস সন্মান বা মর্যাদা দান করা হয়েছে।
ব্যাখ্যা :
আলোচ্য আয়াতে কারীমা দ্বারা একথা প্রতীয়মান হলো যে, ঈমান্দার ব্যক্তিদের মধ্য থেকে যাদেরকে ওহীর জ্ঞানে জ্ঞানী করা হয়েছে, আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে বিশেষ সন্মানে ভূষিত করেছেন। অর্থাৎ- তাদের মস্তকে মর্যাদার বিশেষ মুকুট পরিয়ে দিয়েছেন।
০৪. অন্য আয়াতে কারীমায় ইরশাদ হয়েছে-
قال الله تبارك وتعا لى :
* شَهِدَ اللَّهُ أَنَّهُ لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ وَالْمَلَائِكَةُ وَأُولُو الْعِلْمِ قَائِمًا بِالْقِسْطِ لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ ( العمران-18)-
ইরশাদ হচ্ছে যে, আল্লাহ তায়লা স্বয়ং এ কথার উপর স্বাক্ষ্য দিচ্ছেন যে, তিনি ছাড়া কোন উপাস্য নেই। আল্লাহর স্বাক্ষ্যের পাশাপাশি একথার স্বাক্ষ্য দিচ্ছেন ফেরেশ্তামন্ডলী ও ওলামায়ে কেরাম। আল্লাহ তায়ালাই একমাত্র ইনসাফের উপর প্রতিষ্ঠিত রয়েছেন।
ব্যাখ্যা :
আলোচ্য আয়াতে কারীমায় আল্লাহ তায়ালা তার সত্তার একত্ববাদের স্বাক্ষ্য দিয়েছেন। প্রথমে তিনি নিজে, দ্বিতিয় পর্যায়ে ফেরেশ্তামন্ডলী ও তৃতীয় পর্যায়ে ওলামায়ে কিরামের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এর দ্বারা একথা প্রতীয়মান হয় যে, মর্যাদার দিক থেকে (নাবী-রাসূল ব্যতিত) ফেরেশ্তাকুলের পরেই ওলামায়ে কেরামের অবস্থান।
০৫. আল্লাহ তায়ালা আরও ইরশাদ ফরমান : যারা ওহীর জ্ঞানে জ্ঞানী তথা আলিম, তারাই আল্লাহ তায়ালাকে ভয় করেন।
قا ل الله تعالى :
* إِنَّمَا يَخْشَى اللَّهَ مِنْ عِبَادِهِ الْعُلَماء – ( الفا طر -28 )
একমাত্র (ওহীর জ্ঞানে জ্ঞানী) আলিমগণই আমাকে ভয় করে থাকে।
০৬.আল্লাহ তায়ালা আরও ইরশাদ ফরমান :
قال الله تعا لى :
• فَاسْأَلُوا أَهْلَ الذِّكْرِ إِنْ كُنْتُمْ لَا تَعْلَمُونَ ( النحل-43)
তোমরা যারা জানো না, যারা জানে তাদের কাছ থেকে জিজ্ঞেস করে জেনে নাও।
০৭. একমাত্র আলিমগণই ভাল-মন্দ ও হক বাতিলের মাঝে পার্থক্য নির্ণয় করতে পারে। কুরআনুল কারীমে ইরশাদ হয়েছে :
• وَمَا يَعْقِلُهَا إِلَّا الْعَالِمُونَ-(العنكبوت- 43)
একমাত্র আলেমগণই ভাল-মন্দ ও হক-বাতিলের মাঝে পার্থক্য নির্ণয় করতে পারে।
যরত আনাস রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: 'প্রতিটি মুসলিম পুরুষের উপর দ্বীনী ইলম শিক্ষা গ্রহণ করা ফরজ।'
মুয়াবিয়া রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ ফরমান: 'আল্লাহ তায়ালা যার জন্য বিশেষ কল্যাণ কামনা করেন, তাকে দ্বীনী জ্ঞান অর্জন ও বুঝার তাওফিক দান করেন।' সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৭৩১২, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১০৩৭
আবু হুরায়রা রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: 'যখন মানুষ মৃত্যু বরণ করে, তখন তার সব আমলের দরজা বন্ধ হয়ে যায়, কিন্তু তিনটি আমল এমন যার সাওয়াব বন্ধ হয় না।'
০১. ছাদক্বায়ে জারিয়া অর্থাৎ- প্রবাহমান ছাদক্বাহ।
০২. ইলম : যার দ্বারা জনগণ উপকৃত হয়।
০৩. নেক সন্তান : যে তার জন্য দুআ করে। সহীহ মুসলিম, ১৬৩১
রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট দু‘জন ব্যক্তি সম্পর্কে আলোচিত হলো। তাদের একজন আবেদ (সাধারণ ইবাদতকারী) আর অপরজন আলেম, (কার ফজিলাত বেশি?) । রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: আবেদের উপর আলেমের শ্রেষ্ঠত্ব তেমন, যেমন আমার শ্রেষ্ঠত্ব তোমাদের মধ্যে একজন সাধারণ ব্যক্তির উপর। অত:পর রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: আল্লাহ তায়ালা ও তার ফেরেশতাগণ এবং আসমান –যমিনের অধিবাসীরা এমনকি গর্তের পিপীলিকা ও পানির মাছ পর্যন্ত যে ব্যক্তি মানুষকে ভাল কথা বলে তথা ইলম শিক্ষা দিয়ে থাকেন, তার জন্য দুআ করে।' তিরমিজি শরিফ